
প্যারাসিটামল, উপকারিতার পাশাপাশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোও জানুন
ভূমিকা
প্যারাসিটামল (Paracetamol) বা এসিটামিনোফেন (Acetaminophen) হলো সারা বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত একটি ব্যথানাশক ও জ্বর কমানোর ওষুধ। সঠিক মাত্রায় ব্যবহারে এটি অত্যন্ত কার্যকর হলেও অতিরিক্ত বা ভুলভাবে গ্রহণ করলে কিছু গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই প্যারাসিটামল গ্রহণের আগে এর সম্ভাব্য সাইড ইফেক্ট সম্পর্কে জানা জরুরি।
সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
-
বমি বমি ভাব বা বমি
কখনো কখনো প্যারাসিটামল খাওয়ার পর হালকা বমি বমি ভাব হতে পারে। -
পেটের অস্বস্তি
অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বা পেট ব্যথা হতে পারে। -
ত্বকের এলার্জি
বিরল হলেও কিছু মানুষের ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি বা লালচে র্যাশ দেখা যেতে পারে।
গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
-
লিভার ক্ষতি
সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়া। অতিরিক্ত প্যারাসিটামল গ্রহণ করলে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে, এমনকি লিভার ফেইলিওর পর্যন্ত হতে পারে। -
কিডনি সমস্যা
দীর্ঘমেয়াদে অতিমাত্রায় সেবনে কিডনির কার্যক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। -
অ্যানাফাইল্যাক্সিস
খুবই বিরল হলেও কখনো কখনো তীব্র অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হতে পারে, যা জীবনঘাতী হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, ফোলা, চামড়ায় ফুসকুড়ি ইত্যাদি।
কখন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন?
-
প্যারাসিটামল গ্রহণের পর যদি প্রচণ্ড পেট ব্যথা, চোখের সাদা অংশ বা চামড়া হলদেটে হয়ে যায়,
-
যদি ঘন ঘন বমি হয় বা শরীর দুর্বল লাগে,
-
বা যদি ত্বকে অদ্ভুত ফুসকুড়ি বা ফুলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়,
তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
সতর্কতা
-
কখনোই নির্ধারিত ডোজের বেশি প্যারাসিটামল গ্রহণ করবেন না।
-
একসাথে একাধিক ওষুধ নেয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন ওষুধগুলোতে প্যারাসিটামল আছে কিনা, কারণ অনেক ঠান্ডা ও ব্যথার ওষুধেও লুকিয়ে প্যারাসিটামল থাকে।
-
শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতার সাথে ডোজ নির্ধারণ করা উচিত।
শেষ কথা
প্যারাসিটামল যেমন সহজলভ্য ও কার্যকর, তেমনি ভুল ব্যবহারে হতে পারে ভয়াবহ বিপদ। তাই ওষুধটি সঠিক নিয়মে ও পরিমিত মাত্রায় ব্যবহার করাই হবে আপনার জন্য নিরাপদ। স্বাস্থ্য সচেতন হোন, সুরক্ষিত থাকুন।